খুলনার শেখ বাড়ি হিসেবে খ্যাত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাইদের বাড়ি গুড়িয়ে দিয়েছে ছাত্র-জনতা। বুধবার রাত ৯টার দিকে বুলডোজার দিয়ে এ বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এর আগে নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত ছাত্র-জনতা শেরে বাংলা রোডে অবস্থিত শেখ বাড়ির সামনে এসে জড়ো হতে থাকে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এসময় ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেয়। এক পর্যায়ে তারা পরিত্যক্ত ওই বাড়ির প্রবেশ পথে টিন ও বাঁশ দিয়ে ঘিরে রাখা অস্থায়ী দরজা ভেঙে ফেলে ভেতরে প্রবেশ করে। উত্তেজিত জনতা রুদ্ররোষে দোতলা ওই বাড়িতে লাঠি, রড দিয়ে আঘাত হানে।
রাত সাড়ে ৯ টার দিকে একটি এবং তার ১০ মিনিট পরে আরও একটি বুলডোজার সেখানে আসে। তার আগেই ছাত্র-জনতা পরিত্যক্ত বাঁশ, কাঠ ও অন্যান্য সামগ্রীতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় সামনের ব্যস্ততম শেরে বাংলা রোডে যাব চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মিনহাজুল আবেদীন সম্পদ দৈনিক টার্গেটকে বলেন, এই শেখ বাড়ি ছিল ‘হাসিনার দ্বিতীয় কেবলা’। খুলনাবাসীকে নির্যাতিত নিষ্পেষিত করার আখড়াস্থল। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ঘটতো এখান থেকে। গত ৪ আগস্ট এই বাড়িটি ছাত্র-জনতা ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিল। কিন্তু এর কাঠামো দাঁড়িয়েছিল। ফ্যাসিবাদের দোসররা বাড়িটি রক্ষা করতে দুই প্রবেশ পথে বাঁশ টিনের বেড়া দিয়েছিল। এই কাঠামোর ওপর ভর করে তারা আবারও বাংলার মাটিতে পুনর্বাসিত হতে চায়। এই মাটি থেকে আজও শহীদদের রক্তের দাগ শুকায়নি। আমরা আর কোন ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের সুযোগ দেবো না।
উল্লেখ্য- শেখ হাসিনার চাচাতো পাঁচ ভাই সাবেক এমপি শেখ হেলাল, সাবেক এমপি শেখ জুয়েল, বিসিবির সাবেক পরিচালক শেখ সোহেলসহ পাঁচ ভাই এই বাড়িতে প্রায়ই বসবাস করতেন এবং এই বাড়ি থেকে রাজনীতি, চাকরি বাকরি, নিয়োগ বদলি, নির্বাচনে নমিনেশন, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখার শেষ সময় পর্যন্ত দুটো বুলডোজার বাড়ি ভাঙার কাজ করছিল। সেখানে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষীবাহিনীর কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি।