আদিবাসীদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি দাবি ঐক্য পরিষদের

  • দৈনিক টার্গেট
  • প্রকাশ: ০৯:৩১:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
  • ৫৩ বার পঠিত হয়েছে

আদিবাসী ছাত্র-জনতার দাবিকে ন্যায়সঙ্গত উল্লেখ করে ‘আদিবাসী’ সম্বলিত গ্রাফিতি বা চিত্রকর্ম পাঠ্যপুস্তকে পুনঃসংযোজনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম এবং বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা। একইসঙ্গে আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান তারা।

শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধন থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এ দাবি জানান নেতারা। ঢাকার পাঠ্যপুস্তক ভবনের সামনে গত বুধবার বিক্ষোভরত আদিবাসী ছাত্র-জনতার উপর হামলা এবং সারাদেশে চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন থেকে অবিলম্বে ৮ দফা বাস্তবায়নেরও দাবি জানানো হয়।

ছাত্র ও যুব ঐক্য পরিষদের মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক বলেন, বাংলাদেশে জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ আদিবাসী। এখানে প্রায় ২৫ লক্ষ আদিবাসী বসবাস করছে। তাদের অধিকার সংরক্ষিত হতে হবে।

আদিবাসী ছাত্র-জনতার দাবিকে ‘যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত’ উল্লেখ করে ঐক্য পরিষদের আরেক সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, রাজধানীর পাঠ্যপুস্তক ভবনের সামনে তাদের ওপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রে এই ধরনের হামলা চলতে পারে না। এ সময় তিনি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। একইসঙ্গে অবিলম্বে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ৮ দফা বাস্তবায়নেরও দাবি জানান।

ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ৫৩ বছর হলো বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু আমাদের চোখের পানি এক দিনের জন্যও বন্ধ হয়নি। আমাদের প্রত্যাশা, আগামীতে বাংলাদেশ এমন একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবে, যেখানে মানবতা প্রতিষ্ঠিত হবে।

এ সময় আদিবাসীদের ওপর হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন এবং দায়ী সকলকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি। ঐক্য পরিষদের এই নেতা বলেন, আদিবাসীদের অধিকার সংরক্ষণে ঐক্য পরিষদ পাশে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।

ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন- বাংলাদেশে আমরা সবাই একটি পরিবার। কিন্তু আজকে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসীদের কথা বলা হচ্ছে না। সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য বিরাজমান। এমন অবস্থায় অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র বিনির্মাণ হতে পারে না।

আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকে অমানবিক ও ন্যাক্কারজনক আখ্যায়িত করে হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করেন ঐক্য পরিষদের এই নেতা।

সভাপতির বক্তব্যে যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি শিমুল সাহা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এ সময় তিনি ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাসগুপ্তের মামলা প্রত্যাহার এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।

ছাত্র ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দিপংকর চন্দ্র শীলের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন-ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য মিলন কান্তি দত্ত, যুগ্ম সম্পাদক রমেন মন্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক দিপংকর ঘোষ, যুব ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি সজিব বড়ুয়া, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সরকার, ছাত্রঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সজীব সরকার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রদীপ কান্তি দে, রাজেস নাহা, জগদিশ চাকমা, উজ্জল আজিম, প্রদীপ ত্রিপুরা, মিল্কি হাজড়া, গৌতম মজুমদারসহ অনেকে। মানববন্ধন শেষে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।

শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্যে বিক্ষিপ্ত ছাত্র-জনতার তোপে নিরাপত্তায় বঙ্গভবন

আদিবাসীদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি দাবি ঐক্য পরিষদের

প্রকাশ: ০৯:৩১:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫

আদিবাসী ছাত্র-জনতার দাবিকে ন্যায়সঙ্গত উল্লেখ করে ‘আদিবাসী’ সম্বলিত গ্রাফিতি বা চিত্রকর্ম পাঠ্যপুস্তকে পুনঃসংযোজনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম এবং বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা। একইসঙ্গে আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান তারা।

শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধন থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এ দাবি জানান নেতারা। ঢাকার পাঠ্যপুস্তক ভবনের সামনে গত বুধবার বিক্ষোভরত আদিবাসী ছাত্র-জনতার উপর হামলা এবং সারাদেশে চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন থেকে অবিলম্বে ৮ দফা বাস্তবায়নেরও দাবি জানানো হয়।

ছাত্র ও যুব ঐক্য পরিষদের মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক বলেন, বাংলাদেশে জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ আদিবাসী। এখানে প্রায় ২৫ লক্ষ আদিবাসী বসবাস করছে। তাদের অধিকার সংরক্ষিত হতে হবে।

আদিবাসী ছাত্র-জনতার দাবিকে ‘যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত’ উল্লেখ করে ঐক্য পরিষদের আরেক সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, রাজধানীর পাঠ্যপুস্তক ভবনের সামনে তাদের ওপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রে এই ধরনের হামলা চলতে পারে না। এ সময় তিনি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। একইসঙ্গে অবিলম্বে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ৮ দফা বাস্তবায়নেরও দাবি জানান।

ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ৫৩ বছর হলো বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু আমাদের চোখের পানি এক দিনের জন্যও বন্ধ হয়নি। আমাদের প্রত্যাশা, আগামীতে বাংলাদেশ এমন একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবে, যেখানে মানবতা প্রতিষ্ঠিত হবে।

এ সময় আদিবাসীদের ওপর হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন এবং দায়ী সকলকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি। ঐক্য পরিষদের এই নেতা বলেন, আদিবাসীদের অধিকার সংরক্ষণে ঐক্য পরিষদ পাশে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।

ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন- বাংলাদেশে আমরা সবাই একটি পরিবার। কিন্তু আজকে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসীদের কথা বলা হচ্ছে না। সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য বিরাজমান। এমন অবস্থায় অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র বিনির্মাণ হতে পারে না।

আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকে অমানবিক ও ন্যাক্কারজনক আখ্যায়িত করে হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করেন ঐক্য পরিষদের এই নেতা।

সভাপতির বক্তব্যে যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি শিমুল সাহা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এ সময় তিনি ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাসগুপ্তের মামলা প্রত্যাহার এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।

ছাত্র ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দিপংকর চন্দ্র শীলের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন-ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য মিলন কান্তি দত্ত, যুগ্ম সম্পাদক রমেন মন্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক দিপংকর ঘোষ, যুব ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি সজিব বড়ুয়া, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সরকার, ছাত্রঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সজীব সরকার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রদীপ কান্তি দে, রাজেস নাহা, জগদিশ চাকমা, উজ্জল আজিম, প্রদীপ ত্রিপুরা, মিল্কি হাজড়া, গৌতম মজুমদারসহ অনেকে। মানববন্ধন শেষে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।