খেজুরের রস কাঁচা খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ

  • দৈনিক টার্গেট
  • প্রকাশ: ০১:৩০:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১২২ বার পঠিত হয়েছে

খেজুরের রস

প্রাকৃতিকভাবে খেজুরের রস হলো পুষ্টিকর পানীয়, যা শীতকালে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এটি খাওয়ার ফলেই কয়েকটি স্বাস্থ্যকর উপকারিতা এবং সতর্কতা রয়েছেন। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ ভাইরাসের আতঙ্কিত দেখা দিয়েছে।

খেজুরের রস গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ, যা তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়। এতে আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি থাকে, যা শরীরের নানা কার্যক্রমে সহায়ক। এতে প্রাকৃতিক এনজাইম রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে।

তবে খেজুরের রস দ্রুত ফরমেন্টেড হয়ে টডি (অ্যালকোহলিক পানীয়) এ পরিণত হয়। তাই দীর্ঘ সময় রেখে দিলে এটি পান করলে ক্ষতি হতে পারে। ডায়াবেটিক রোগীদের এটি সাবধানে খেতে হবে, কারণ এতে প্রাকৃতিক চিনি থাকে।

নিপাহ ভাইরাসের ঝুঁকি

খেজুরের রসে বাদুড় যখন মুখ দেয়। তখন তাদের মুখ থেকে নিঃসৃত লালা এমনকি তাদের মলমূত্র খেজুরের রসের সাথেই মিশে মিলে যায়। এই দূষিত রস কাঁচা অবস্থায়ই খেলে নিপাহ ভাইরাস সরাসরি মানুষের মধ্যে সংক্রামিত হতে পারে। এর ফলে জ্বর, মাথাব্যথা, দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, কাঁশি, বমি, ডায়রিয়া নানা ধরণের শারীরিকভাবেও জটিলতা দেখা দেয়। যা মৃত্যুর কারণ পর্যন্তও হতে পারে।

খেজুরের রস

নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কোন টিকা বা কার্যকর চিকিৎসা নেই। এ কারণে খেজুরের রস খাওয়া বন্ধ করে দেবেন, বিষয়টা তা নয়, এক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে সতর্ক হলেই হবে।

সতর্কতা

চলতি বছরে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫ জন। আক্রান্ত ৫ জনই মারা গিয়েছিলেন। অন্যদিকে ২০২৩ সালে নিপাহ ভাইরাসে ১৩ জন আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১০ জন। এতে ওই বছর এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহার ছিল ৭৭ শতাংশ। চলতি বছর মৃত্যুহার দাঁড়িয়েছে শতভাগই।

১. প্রথমত রস সংগ্রহ ও সংরক্ষণের সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। চেষ্টা করতে হবে দ্রুত রস বিতরণ করার এবং ঢেকে রাখার।

২. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ভাইরাস থেকে নিস্তারের পাওয়ার প্রধান উপায় হল গাছগুলোর রস সংগ্রহের জায়গায় প্রতিরক্ষামূলক আবরণে বা স্যাপ স্কার্ট ব্যবহার করা, যেন বাদুড়ের সংস্পর্শে না আসতে পারে।

৩. স্যাপ স্কার্ট হল, বাঁশ, কাঠ, ধইঞ্চা, পাটের খড়ি বা পলিথিন দিয়ে বাঁধানো বেড়া। যেটা রসের নিঃসরণের চোঙের মাথা থেকে কলসির মুখ পর্যন্ত পুরোটাই গাছের সাথেই বেঁধে ঢেকে রাখা।

৪. কলসির মুখে ঢাকনার ব্যবস্থা সহ রসের উৎস মূল ঘিরেই নাইলনের জাল দিয়ে বেষ্টনী দিতে হবে।

এদিকে আইসিডিডিআর’বির গবেষকরা গোপন ক্যামেরার মাধ্যমে দেখতে পেয়েছেন যে, রসের হাড়ির চারপাশে জাল বা এমন স্যাপ স্কার্ট দিয়ে ঢেলে দিলেও বাদুর কলসির মুখ বরাবর প্রস্রাব করে। ওই বেড়া দিয়ে বাদুড়ের রস খাওয়া প্রতিরোধ করা গেলেও ওই প্রস্রাবের গতি ঠেকানো যায় না। ফলে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। তাই জীবন রক্ষার্থে রস সিদ্ধ করে পান করা নিরাপদ।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

খেজুরের রস কাঁচা খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ

প্রকাশ: ০১:৩০:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রাকৃতিকভাবে খেজুরের রস হলো পুষ্টিকর পানীয়, যা শীতকালে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এটি খাওয়ার ফলেই কয়েকটি স্বাস্থ্যকর উপকারিতা এবং সতর্কতা রয়েছেন। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ ভাইরাসের আতঙ্কিত দেখা দিয়েছে।

খেজুরের রস গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ, যা তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়। এতে আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি থাকে, যা শরীরের নানা কার্যক্রমে সহায়ক। এতে প্রাকৃতিক এনজাইম রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে।

তবে খেজুরের রস দ্রুত ফরমেন্টেড হয়ে টডি (অ্যালকোহলিক পানীয়) এ পরিণত হয়। তাই দীর্ঘ সময় রেখে দিলে এটি পান করলে ক্ষতি হতে পারে। ডায়াবেটিক রোগীদের এটি সাবধানে খেতে হবে, কারণ এতে প্রাকৃতিক চিনি থাকে।

নিপাহ ভাইরাসের ঝুঁকি

খেজুরের রসে বাদুড় যখন মুখ দেয়। তখন তাদের মুখ থেকে নিঃসৃত লালা এমনকি তাদের মলমূত্র খেজুরের রসের সাথেই মিশে মিলে যায়। এই দূষিত রস কাঁচা অবস্থায়ই খেলে নিপাহ ভাইরাস সরাসরি মানুষের মধ্যে সংক্রামিত হতে পারে। এর ফলে জ্বর, মাথাব্যথা, দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, কাঁশি, বমি, ডায়রিয়া নানা ধরণের শারীরিকভাবেও জটিলতা দেখা দেয়। যা মৃত্যুর কারণ পর্যন্তও হতে পারে।

খেজুরের রস

নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কোন টিকা বা কার্যকর চিকিৎসা নেই। এ কারণে খেজুরের রস খাওয়া বন্ধ করে দেবেন, বিষয়টা তা নয়, এক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে সতর্ক হলেই হবে।

সতর্কতা

চলতি বছরে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫ জন। আক্রান্ত ৫ জনই মারা গিয়েছিলেন। অন্যদিকে ২০২৩ সালে নিপাহ ভাইরাসে ১৩ জন আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১০ জন। এতে ওই বছর এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহার ছিল ৭৭ শতাংশ। চলতি বছর মৃত্যুহার দাঁড়িয়েছে শতভাগই।

১. প্রথমত রস সংগ্রহ ও সংরক্ষণের সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। চেষ্টা করতে হবে দ্রুত রস বিতরণ করার এবং ঢেকে রাখার।

২. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ভাইরাস থেকে নিস্তারের পাওয়ার প্রধান উপায় হল গাছগুলোর রস সংগ্রহের জায়গায় প্রতিরক্ষামূলক আবরণে বা স্যাপ স্কার্ট ব্যবহার করা, যেন বাদুড়ের সংস্পর্শে না আসতে পারে।

৩. স্যাপ স্কার্ট হল, বাঁশ, কাঠ, ধইঞ্চা, পাটের খড়ি বা পলিথিন দিয়ে বাঁধানো বেড়া। যেটা রসের নিঃসরণের চোঙের মাথা থেকে কলসির মুখ পর্যন্ত পুরোটাই গাছের সাথেই বেঁধে ঢেকে রাখা।

৪. কলসির মুখে ঢাকনার ব্যবস্থা সহ রসের উৎস মূল ঘিরেই নাইলনের জাল দিয়ে বেষ্টনী দিতে হবে।

এদিকে আইসিডিডিআর’বির গবেষকরা গোপন ক্যামেরার মাধ্যমে দেখতে পেয়েছেন যে, রসের হাড়ির চারপাশে জাল বা এমন স্যাপ স্কার্ট দিয়ে ঢেলে দিলেও বাদুর কলসির মুখ বরাবর প্রস্রাব করে। ওই বেড়া দিয়ে বাদুড়ের রস খাওয়া প্রতিরোধ করা গেলেও ওই প্রস্রাবের গতি ঠেকানো যায় না। ফলে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। তাই জীবন রক্ষার্থে রস সিদ্ধ করে পান করা নিরাপদ।